লোকসভার স্পিকার পদ পেতে মরিয়া জোট শরিক'রা! সরকারের চালিকাশক্তি ছাড়তে নারাজ মোদি- অমিত শাহ
বেবি চক্রবর্ত্তী:- মন্ত্রিত্বের সংখ্যায় নমনীয় বিজেপি কিন্তু সরকারের 'রাশ' ছাড়তে নারাজ মোদি- অমিত শাহরা।একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে দল। তা বলে সরকারের রাশ কোনওভাবেই নিজেদের হাত থেকে ছাড়তে নারাজ মোদি- অমিত শাহরা। সংখ্যার বিচারে হয়তো শরিকদের আগের থেকে বেশি আসন ছাড়তে হবে। কিন্তু কোনওভাবেই সরকারের চালিকা শক্তি যে মন্ত্রকগুলি সেগুলি নিজেদের হাতেই রাখতে চান মোদি-শাহরা।
নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি বিজেপি-র সঙ্গে দর কষাকষিতে এগিয়ে রয়েছেন। বিভিন্ন মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি লোকসভার স্পিকার পদটির জন্যও দাবি জানিয়েছে বিজেপি-র একাধিক শরিক দল। কিন্তু স্পিকার পদের প্রতি সবার নজর কেন?
প্রথম দুই মোদি সরকারের ক্ষেত্রে শরিকদের অংশগ্রহণ ছিল নামমাত্র। সুযোগ বুঝে এবার পালটা দর কষাকষি শুরু করেছেন শরিকরা। কেন্দ্রে সরকার গড়তে বিজেপির চার শরিক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক, চন্দ্রবাবু নায়ডু। তাঁর দাবি অন্তত ৪টি পূর্ণ মন্ত্রিত্ব। এবং স্পিকারের পদ। দুই, নীতীশ কুমার। তাঁর দাবি রেল-সহ ৩ পূর্ণ মন্ত্রিত্ব, একাধিক প্রতিমন্ত্রী। এবং এনডিএর একটি সমন্বয় কমিটি গড়া যার মাথায় থাকবেন নীতীশ কুমার নিজেই। তিন নম্বর গুরুত্বপূর্ণ লোক হলেন একনাথ শিণ্ডে। তাঁর বিশেষ দাবি নেই। গোটা দুই পূর্ণ মন্ত্রিত্ব। আর চার নম্বর গুরুত্বপূর্ণ লোকটি হলেন চিরাগ পাসওয়ান। তাঁর দাবি, ১ পূর্ণ মন্ত্রীর পদ ও এক প্রতিমন্ত্রীর পদ।
বিজেপি সূত্রের খবর শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় সংখ্যার বিচারে খানিকটা হলেও নমনীয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক ছাড়া হবে না। টিডিপিকে যেমন স্পিকারের পদ ছাড়া হবে না। খুব বেশি হলে ডেপুটি স্পিকারের পদ দেওয়া হতে পারে। জেডিইউয়ের খাতায় রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদ আগে থেকেই আছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত, কোনও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক ছাড়া হবে না শরিকদের। অর্থমন্ত্রক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রক ছাড়ার প্রশ্নই নেই।
চন্দ্রবাবু নায়ডুর দাবি সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক, শিক্ষা মন্ত্রক, গ্রামন্নয়ন মন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। জেডিইউ চায় রেলমন্ত্রক-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। কিন্তু মোদি-শাহদের স্পষ্ট বক্তব্য, সড়ক পরিবহণ বা গ্রামোন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর কাউকে ছাড়া হবে না। রেলমন্ত্রকও নিজেদের হাতেই রাখতে চায় গেরুয়া শিবির। তবে এখনও রেল, পশুপালন, শিক্ষা নিয়ে আলোচনা চলছে দুই শরিকের সঙ্গে।
এন ডি এ সরকার:- বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-র সবথেকে বড় দুই শরিক হল টিডিপি এবং জেডিইউ। দুই দলই স্পিকার পদ পাওয়ার দাবি জানিয়েছে। জোট সরকার যখন গঠিত হয়, তখন বিভিন্ন ইস্যুতে স্পিকারকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে হয়, তা অজানা হয় চন্দ্রবাবু নায়ডুর। কারণ তাঁর দল অতীতে একাধিক জোট সরকারে সামিল থেকেছে। তাই এর গুরুত্ব টিডিপি ভালোই বোঝে।
বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-র সবথেকে বড় দুই শরিক হল টিডিপি এবং জেডিইউ। দুই দলই স্পিকার পদ পাওয়ার দাবি জানিয়েছে। জোট সরকার যখন গঠিত হয়, তখন বিভিন্ন ইস্যুতে স্পিকারকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে হয়, তা অজানা হয় চন্দ্রবাবু নায়ডুর। কারণ তাঁর দল অতীতে একাধিক জোট সরকারে সামিল থেকেছে। তাই এর গুরুত্ব টিডিপি ভালোই বোঝে।
লোকসভার অধিবেশনের প্রথম দিনে স্পিকার নির্বাচন করা হয়। তার আগে প্রোটেম স্পিকার হিসাবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অধিবেশনে স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাঁরাই এই দায়িত্ব পালন করেন।
লোকসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ স্পিকার এছাড়াও লোকসভার প্রধান হলেন স্পিকার। তিনি সংসদের নিম্মকক্ষের মুখপাত্রও বটেন। সংসদ পরিচালনা, সংসদে সাংসদদের আচরণ বিধি দেখভাল এবং সংসদ পরিচালনার সমস্ত ভার স্পিকারের কাঁধে ন্যস্ত থাকে। স্পিকারকে সংবিধানের শেষরক্ষক হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। প্রশ্ন যখন জোট সরকারর পরিচালনার হয়, তখন স্পিকারের গুরুত্ব কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সংসদের অন্দরে অধিবেশন পরিচালনায় স্পিকার মুন্সিয়ানার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সেই সঙ্গে সংসদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত স্পিকার নিয়ে থাকেন। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট গত ১০ বছরের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই সংসদের অন্দরে বিল পাশ হোক বা অন্য যে কোনও বিষয়ে আলোচনা। অতীতের থেকে বেশি বাধা যে তৃতীয়বারের মোদী সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে তা বলাই বাহুল্যে। এই পরিস্থিতিতেই স্পিকার পদ ছেড়ে দিতে আগ্রহী নয় বিজেপি। কিন্তু শরিকদের আবদার মেটাতে শেষ অবধি কী সিদ্ধান্ত হয়, সে দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
Comments
Post a Comment