পুরানো কলকাতার ফুটবল ও ক্রিকেট

বেবি চক্রবর্ত্তীঃ পুরনো কলকাতা আজ যেন স্মৃতি বহমান। ঐতিহ্য পুরানো পাতা। বহুকাল পূর্বে দশবছরের ছেলে ‘নগেন’ একদিন তাঁর মায়ের সঙ্গে গঙ্গাস্নান সেরে ফিরছিল। তাঁদের ঘোড়ার গাড়িটা সাবেক কলকাতার ‘কিংসওয়ে’ দিয়ে যাবার সময় নগেন অবাক হয়ে দেখেছিল যে কতগুলো গোরা সৈন্য একটা চামড়ার বল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে কি যেন একটা খেলা খেলছে। ওই ধরনের খেলা নগেন আগে কখনো দেখেনি।

এই নগেনই ছিলেন কলকাতার ফুটবলের জনক ‘নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারী’। তখনকার দিনের কলকাতার নামকরা ডাক্তার ‘সূর্যকুমার সর্বাধিকারী’র ছেলে। ১৮৭৮ সালে সেই গঙ্গাস্নানের দিনে দেখা ইংরেজদের ওই খেলাই পরে নগেন্দ্র প্রসাদের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পরের দিন ‘হেয়ার স্কুলের’ ক্লাসে গিয়ে নগেন্দ্রপ্রসাদ তাঁর বন্ধুদের কাছে সেই বিচিত্র বল খেলা দেখার কথার গল্প করেছিলেন। এরপরে ছেলেরা ঠিক করেছিল যে স্কুলের শিক্ষকদের কানে সেই কথা না তুলে তাঁরা নিজেরাই চাঁদা তুলে ওই রকমের একটা বল কিনবে। সব মিলিয়ে মোট তিরিশ টাকা চাঁদা উঠেছিল। সেই টাকা নিয়ে ছেলেরা চৌরঙ্গির একটা দোকানে গিয়েছিল।

ওই দোকানের ইউরোপীয়ান সেলসম্যানকে নগেন্দ্রপ্রসাদ হাত দিয়ে দেখিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি কী চান। ওই ইউরোপীয়ান সেলসম্যান তখন টেবিলের ওপরে একটা ফুটবল এনে রেখেছিলেন। ছেলেদের আর সবুর সইছিল না। তাঁরা পারলে তক্ষুণি বলটা নিয়ে মাঠে নেমে যেত। কিন্তু ফুটবলের দাম শুনে তাঁদের মুখ শুকিয়ে গিয়েছিল। তাঁরা পরস্পর মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে শুরু করেছিল। তাঁদের ওই অবস্থা দেখে ইউরোপীয়ান সেলসম্যানের কেমন যেন মায়া হয়েছিল। তাই তিনি তিরিশ টাকাতেই ছেলেদের সেই ফুটবলটা দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরে সেই ফুটবল নিয়ে প্রায় ছুটতে ছুটতে এসে হেয়ার স্কুলের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ছেলেরা। তাঁদের দলপতি ছিলেন নগেন্দ্রপ্রসাদ।

ওদিকে ‘প্রেসিডেন্সি কলেজের’ অধ্যাপক ‘মিঃ স্ট্যাক’ দেখেছিলেন যে হেয়ার স্কুলের কিছু ছেলে একটা ফুটবল নিয়ে মাঠে এলোপাথাড়ি ছুটে চলেছে। তিনি মাঠে ঢুকে ছেলেদের ডেকে তাঁদের ফুটবল খেলার সমস্ত নিয়ম কানুন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরে একদিন অধ্যাপক স্ট্যাক নগেন্দ্র প্রসাদকে একটা ফুটবল আর ফুটবল খেলার নিয়ম কানুনের একখানা বই উপহার দিয়েছিলেন। 

সেই বই থেকে ফুটবল খেলার নিয়মকানুন শিখে হেয়ার স্কুলের ছেলেরা যেদিন প্রথম দু’দলে ভাগ হয়ে স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলতে নেমেছিল, সেদিন মাঠে আর রাস্তায় লোক ভেঙে পড়েছিল। কলেজ স্ট্রীট লোকে লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিল। এমন খেলা আগে কখনো দেখা যায় নি। এরপরে নগেন্দ্র প্রসাদের নেতৃত্বে হেয়ার স্কুলে ফুটবল খেলাটা একটা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

কিন্তু কলকাতায় প্রথম ফুটবল খেলা হয়েছিল ১৮৫৩ সালে, এসপ্লানেড মাঠে। সেই খেলা হয়েছিল ‘ব্যারাকপুরের’ একদল ইংরেজের সঙ্গে ‘কলকাতার সিভিলিয়ানদের ক্লাবের’। এরপর থেকেই মাঝে মধ্যে ইংরেজরা কলকাতায় নিজেদের মধ্যে ফুটবল খেলত।

নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী প্রকৃতপক্ষেই সর্বগুণের অধিকারী ছিলেন। কলকাতার ফুটবলের গোড়াপত্তন যেমন তাঁর হাতে হয়েছিল, ঠিক তেমনি কলকাতার ক্রিকেটও জন্মলগ্ন থেকেই নগেন্দ্র প্রসাদের আন্তবিক মমতায় লালিত হয়েছিল।

ভারতে ক্রিকেট খেলার তোড়জোড়টা অবশ্য ‘বোম্বাই’তে প্রথম দেখা গিয়েছিল। সে কথা শুনেই কলকাতার ‘প্রেসিডেন্সি কলেজের’ ছাত্ররা ১৮৭৭ সালে ছোট্ট একটা দল তৈরি করে ‘প্রেসিডেন্সি কলেজ’ আর ‘হেয়ার স্কুলের’ মাঠে কলকাতার প্রথম ক্রিকেট শুরু করেছিল। ওই উভয় দলেরই প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ‘স্যার দেবপ্রসাদ সর্বাধিকারী’। যদিও তিনি তখনও ‘স্যার’ ছিলেন না। সেই সময় তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র। সেই কাজে দেবপ্রসাদের সহযোগী ছিলেন ‘ত্রিগুণাচরণ সেন’ আর ‘হরিচরণ সেন’। হরিচরণ সেন পরে ডাক্তার হিসেবে খ্যাতিলাভ করেছিলেন। পুরানো কলকাতার বিখ্যাত ব্যারিস্টার ‘এস. কে. সেন’ তাঁরই ছেলে।

ক্রিকেট দল তৈরি হয়েছিল। খেলার সরঞ্জাম এসেছিল - ‘আলেকজাণ্ডার ব্যাট’ আর ‘কমপোজিশন বল’। ছাত্রদের ক্রিকেট খেলা দেখতে প্রেসিডেন্সি কলেজের মাঠের রেলিংয়ের ওপাশে ভিড় জমে গিয়েছিল। সেই খেলায় কোন নিয়মকানুন ছিল না। একজন বল ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন আর অন্য প্রান্তে ব্যাট নিয়ে আর এক খেলোয়াড় সেই বলের মোকাবিলা করছিলেন।

প্রেসিডেন্সির দেখাদেখি হেয়ার স্কুলের ছাত্ররাও একসময় ক্রিকেট খেলা শুরু করে দিয়েছিল। তবে তাঁর শুধু ক্রিকেট খেলা শুরু করেন নি, তাঁরা রীতিমত একটা ক্রিকেট ক্লাব তৈরি করেছিলেন। সেই ক্লাবের নাম ছিল ‘বয়েজ ক্লাব’। বঙ্গদেশে খেলাধুলার ইতিহাসে ওই বয়েজ ক্লাবই হল প্রথম স্পোর্টিং ক্লাব। ১৮৮০ সালে বয়েজ ক্লাবের জন্ম হয়েছিল। ওই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা দেবপ্রসাদ সর্বাধিকারীর ছোট ভাই নগেন্দ্ৰপ্ৰসাদ সেই সময় হেয়ার স্কুলের ফোর্থ ক্লাসের ছাত্র ছিলেন। ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত বয়েজ ক্লাব টিকে ছিল। ১৮৮৭ সালে ওই ক্লাবটি ‘শোভাবাজার ক্লাবের’ সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। সেই ক’বছরে বয়েজ ক্লাব সতেরোটা ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছিল। গৌরবের কথা এই যে, সেই সতেরোটা খেলাতেই বয়েজ ক্লাব জয়ী হয়েছিল।

বয়েজ ক্লাবের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ১৮৮০ সালেই ‘হাওড়া ক্রিকেট ক্লাব’ জন্ম নিয়েছিল। পরে সেটার নাম হয়েছিল ‘হাওড়া স্পোর্টিং ক্লাব’। সেই ক্লাব ক্রিকেটে দারুণ সুনাম করেছিল। ওই ক্লাবের কর্ণধার ছিলেন ‘ঈশ্বরচন্দ্র কুণ্ডু’র ছেলে ‘বামাচরণ কুণ্ডু’। বামাচরণের ব্যাটিং ছিল অনবদ্য। হাওড়া স্পোর্টিং ক্লাবের দলের বোলার ‘ভূতনাথ চন্দ্রের’ বোলিংকে তখনকার দিনের গোরা খেলোয়াড়েরাও সমীহ করতেন। এছাড়া ‘মহিম দত্ত’, ‘মাস্টার’, ‘জটাধারী’ প্রমুখ হাওড়া স্পোর্টিং ক্লাবের নামী খেলোয়াড় ছিলেন।

১৮৮১ সালে নগেন্দ্র প্রসাদ বৌবাজারের ‘অক্ষয় দাস’ এবং আরো অন্যান্য কয়েকজনের সঙ্গে মিলে ‘ওয়েলিংটন ক্লাব’ গড়ে তুলেছিলেন। কলকাতা ময়দানে বর্তমানের ‘টাউন ক্লাবের’ জমিতে অতীতের ওয়েলিংটন ক্লাবের মাঠ ছিল। কলকাতা ময়দানের ইতিহাসে ‘বাঙালীর ক্লাব’ বলতে সেটাই ছিল প্রথম ক্লাব। ওই ক্লাবের ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন ‘অক্ষয় দাস’। ১৮৮৩ সালে ওয়েলিংটন ক্লাব উঠে গিয়েছিল।

এরপরে নগেন্দ্র প্রসাদ ‘বয়েজ ক্লাব’, ‘হাওড়া স্পোর্টিং ক্লাব’ আর ‘ওয়েলিংটন ক্লাবের’ সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘প্রেসিডেন্সি ক্লাব’ গড়ে তুলেছিলেন। প্রেসিডেন্সি ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, ১৮৮৫ সালে ‘ইডেনে’ ‘অস্ট্রেলিয়া’র বিরুদ্ধে ক্রিকেট খেলা। কোন বিদেশী দলের সেটাই ছিল ভারতের মাটিতে প্রথম খেলা। সেই খেলায় কলকাতার খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন ‘নগেন্দ্র প্রসাদ’ (ক্যাপ্টেন), ‘হরিদাস শীল’ (সেন্ট জেভিয়ার্স), ‘এস. ব্যানার্জী’ (হাইজাম্প চ্যাম্পিয়ন), ‘লালচাঁদ বড়াল’ (সুবিখ্যাত গায়ক, রাইচাঁদ বড়ালের পিতা), ‘অক্ষয় দাস’ (ওয়েলিংটন), ‘মণি সেন’ (প্রেসিডেন্সি), ‘বামাচরণ কুণ্ডু’ (হাওড়া স্পোর্টিং), ‘রামকানাই’, ‘মোনা বসু’ (মেডিক্যাল কলেজ), ‘হরি চ্যাটার্জী’ আর ‘হর চ্যাটার্জী’ (কৃষ্ণনগর কলেজ)। সেই খেলা ড্র হয়েছিল। ওই খেলা দেখবার জন্য মাঠে উপস্থিত ছিলেন ‘দাদাভাই নৌরজি’, ‘সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়’, ‘মিস্টার হিউম’ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যের ফলে ওয়েলিংটন ক্লাবটি উঠে গিয়েছিল।

এরপরে অধ্যাপক ‘বিপিনবিহারী গুপ্ত’ আর ‘চারুচন্দ্র মিত্র’ উদ্যোগী হয়ে ‘টাউন ক্লাব’ স্থাপন করেছিলেন। পরে সেই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক ‘সারদারঞ্জন রায়’ ও তাঁর ভাইয়েরা - ‘যতীন্দ্র’, ‘মুক্তিদা’, ‘কুলদা’ ও ‘প্রমদা’। ময়মনসিংহের গৌরীপুরের জমিদার ‘ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’ও টাউন ক্লাবের সভ্য ছিলেন।

তখনকার কলকাতার কাগজে ক্রিকেট খেলার খবরে বিচিত্র সব প্রতিশব্দ দেখা যেত। সেই সময়ের কলকাতার সংবাদপত্রের ভাষায় ‘সেঞ্চুরী’কে বলা হত ‘শতমার’, ‘বোলার’ - ‘বলন্দাজ’, ‘ব্যাটসম্যান’ - ‘ব্যাটমদার’, ‘বোলিং আর ব্যাটিং’ - ‘বলন্দাজী আব ব্যাটমদারী’, ‘ওভার হ্যাণ্ড বোলিং’ - ‘ঊর্ধ্ববাহু বলন্দাজী’, ‘আণ্ডার হ্যাণ্ড বোলিং’ - ‘নিম্নবাহু বলন্দাজী’ ইত্যাদি। কলকাতার ক্রিকেট খেলার গোড়ার দিকে ‘আণ্ডার হ্যাণ্ড’ বল করা হত। নগেন্দ্রপ্রসাদই কলকাতার ক্রিকেটে ‘ওভারহ্যাণ্ড’ বলের প্রচলন করেছিলেন।

আজকের কলকাতার গড়ের মাঠ বা ময়দান একদিন ছিল পুকুর আর ডোবা। সেটার চারপাশে ছিল ঘন জঙ্গল। ওই গোটা অঞ্চলের ১১৭৮ বিঘা জমির মধ্যে মাত্র সাতান্ন বিঘা জমিতে মানুষের বাস ছিল। আজকের গড়ের মাঠ তখন ছিল ‘গোবিন্দপুর’ গ্রাম।

পুরানো কলকাতার নতুন কেল্লা তৈরির জন্যে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি সেই গোবিন্দপুর গ্রামটি দখল করে নিয়েছিল। ওই গ্রামের লোকজন তখন কলকাতার উত্তর অঞ্চলে চলে গিয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের কিছু কিছু জমি আর ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়েছিল। পরে কলকাতার নতুন দুর্গ তৈরির সময় কাছাকাছি জায়গার জঙ্গল কেটে সাফ করা হয়েছিল। সেখানকার পুকুরগুলো বুজিয়ে বড় বড় মাঠ তৈরি করা হয়েছিল। যেহেতু গড়ের (দুর্গের) গায়ে লাগানো মাঠ, তাই নাম হয়ে গিয়েছিল ‘গড়ের মাঠ’। সেই মাঠেই ১৮০৪ সালের ১৮ই আর ১৯শে জানুয়ারি তারিখে কলকাতার প্রথম ক্রিকেট খেলা হয়েছিল। সেই খেলা হয়েছিল ‘ইটোনিয়াম সিভিল সার্ভেন্ট’ আর ‘ইংরেজ জেন্টলম্যানদের’ মধ্যে। গোরাদের খেলায় দেশীয়রা তখনো অচ্ছুৎ ছিলেন। তারপরে ১৮২৫ সালে ‘ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাবের’ পত্তনের পর থেকে সেখানে নিয়মিতভাবে ক্রিকেট খেলা শুরু হয়েছিল। তখনও ‘ইডেন গার্ডেন’ হয়নি। ১৮৪১ সালে ‘ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব’ ফোর্ট উইলিয়ম কতৃপক্ষের কাছ থেকে নিজেদের খেলার মাঠ সংরক্ষণের জন্য চারপাশে বাঁশের বেড়া দেবার অনুমতি পেয়েছিল। তখন কোন ‘গ্যালারি’ ছিল না, ‘প্যাভিলিয়ন’ ছিল না। সেই সময় খড়ের ছাউনির ঘরে দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে হত। ১৮৪০ সালে ‘লর্ড অকল্যাণ্ড’ এসপ্ল্যানেডের উত্তর-পশ্চিম দিকে একটা বাগান তৈরি করিয়েছিলেন। সেই বাগানের আদি নাম ছিল ‘অকল্যাণ্ড সার্কাস গার্ডেন’। পরে অকল্যাণ্ডের পারিবারিক পদবি ‘ইডেন’ (মতান্তরে তাঁর বোনের নাম) থেকে ওই বাগানের নাম হয়েছিল ‘ইডেন গার্ডেন’।

Comments

Popular posts from this blog

মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সফলতা

'দরবারী পদাবলী'-তে গুরু-শিষ্য পরম্পরার অনবদ্য নজির কলকাতায়