বেলুড় মঠের শুভ প্রতিষ্ঠা সংকল্প দিবস :-
বেবী চক্রবর্তী:- ১লা মে, ১৮৯৭ সালে স্বামীজি এই শুভ দিনে রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠের প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেছিলেন বলরাম বসুর বাড়িতে অনুষ্ঠিত একটি সভাতে। সেই সূত্রেই এই দিনটিকে শুভ সংকল্প বা শুভ প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে পালিত হয়। প্রায় এর ঠিক এক বছর পর বেলুড় মঠের সার্বিক প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। স্বামীজির এই অমোঘ সিদ্ধান্তের দিনটিকে মনে রাখতে এই দিনটিকে পালন করা হয়।
শ্রীমৎ স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ,নতুন প্রেসিডেন্ট রূপে ১ লা মে ২০২৪ তারিখে বেলুড় মঠের যোগদান করেন। এদিন এক অপূর্ব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শ্রীমৎ স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ তরুণ যোগী জগৎগুরু স্বামী বিবেকানন্দ সম্মন্ধে অসাধারণ বক্তব্য রাখেন।১ লা মে, ১৮৯৭ সালে স্বামীজি বলেন, ” আমরা যার নামে সন্ন্যাসী হয়েছি, যাঁকে জীবনের আদর্শ করে সংসার আশ্রমে কার্যক্ষেত্রে রয়েছে, তাঁর দেহাবসানের বিশ বছরের মধ্যে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে জগতে তাঁর পুণ্য নাম ও অদ্ভুত জীবনের আশ্চর্য প্রসার হয়েছে, এই সংঘ তাঁরই নামে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা প্রভুর দাস, আপনারা এ কাজে সহায় হন”। এই প্রস্তাবে সবাই সানন্দে রাজী হন। শ্রী শ্রী ঠাকুর ও তাঁর শিক্ষার প্রতি যাদের শ্রদ্ধা ও প্রীতি বর্তমান তাঁদের নিয়ে গঠিত হয় একটি সাধারণ সমিতি। সমিতির উদ্দেশ্য বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য একটি পরিচালন সমিতি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তী বুধবার, ৫ ই মে, ১৮৯৭ সালে পুনরায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, সেই সভাতে এই সমিতির নাম দেওয়া হয় “রামকৃষ্ণ মিশন”। এই মিশনের সভাপতির পদ অলংকৃত করে যুগনায়ক স্বামী বিবেকানন্দ। কলকাতা কেন্দ্রের সভাপতি ও সহ সভাপতি হলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও স্বামী যোগানন্দ। নরেন্দ্রনাথ দত্ত হলেন সম্পাদক।স্বামীজি পরিকল্পিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রতীকের ব্যাখ্যা:-
*তরঙ্গসঙ্কুল জলরাশি – কর্ম
*পদ্মফুল – ভক্তি
*উদীয়মান সূর্য – জ্ঞান
*সর্প পরিবেষ্ঠিত – সুপ্ত আধ্যাত্মিক শক্তি ও যোগের প্রকাশক
*হংস – পরমাত্মা
অর্থাৎ, কর্ম, ভক্তি ও জ্ঞান যোগের সাথে সমন্বিত হলেই পরমাত্মার দর্শনলাভ হয় বা উপলব্ধি হয়।
*সরোবরটি – হৃদয়ের প্রতীক”
*আত্মনো মোক্ষ্যাথং জগদ্ধিতায়া চ – আত্মার মোক্ষ ও জগতের কল্যাণ নিমিত্ত।
স্বামীজি মঠের জন্য ১৮৯৮ সালে ৪ঠা মার্চ ওই জমি কিনেছিলেন বাবু ভগৎনারায়ণ সিংহের কাছ থেকে। ছোট দুই বাড়ি সমেত ২২ বিঘা জমি। তবে স্বামীজি জানতেন না ওই জমিতেই ছিল ঠাকুরের গৃহিভক্ত ‘ কাপ্তেন ‘ বিশ্বনাথ উপাধ্যায়ের কাঠগোলা। সেখানেই শ্রী শ্রী ঠাকুরের একদা পদধূলি পড়েছিল। ঠাকুরের মর্তলিলা সংবরণ করার অনেক আগেই ঠাকুর এই স্থানে এসেছিলেন। যেন স্থায়ী মঠ স্থাপনের উদ্দেশ্যই সেখানে ‘ কুটোবাঁধা ‘ হয়ে গিয়েছিল। স্থায়ী মঠ স্থাপনের জন্য অনেক জায়গা দেখা হলেও তা ব্যর্থ হয়েছিল। কারণ ঠাকুর স্বয়ং নিজেই সেই জায়গা ঠিক করে গিয়েছিলেন। এই ঘটনাকে দৈবনির্ধারিত ছাড়া আর কিছুই বলে যায় না।
“রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মৃত্যুর পর তার ভক্ত ও অনুরাগীরা তার শিষ্যদের সাহায্য করা বন্ধ করে দেন। বাড়িভাড়ার টাকা জোগাড় করতে না পারায়, নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য শিষ্যেরা বসবাসের জন্য নতুন বাসস্থানের খোঁজ শুরু করেন।অনেকে বাড়ি ফিরে গিয়ে গৃহস্থ জীবন যাপন করতে থাকেন। অবশিষ্ট শিষ্যদের নিয়ে নরেন্দ্রনাথ উত্তর কলকাতার বরাহনগর অঞ্চলে একটি ভাঙা বাড়িতে নতুন মঠ প্রতিষ্ঠা করার কথা চিন্তা করেন। বরাহনগর মঠের এই বাড়িটির ভাড়া কম ছিল। “মাধুকরী” অর্থাৎ সন্ন্যাসীদের ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে এই বাড়িভাড়ার টাকা জোগাড় করা হত। বরাহনগর মঠ হল রামকৃষ্ণ মঠের প্রথম ভবন। এই মঠে নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য শিষ্যেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধ্যান করতেন এবং কঠোর ধর্মানুশীলন অভ্যাস করতেন।পরবর্তীকালে নরেন্দ্রনাথ বরাহনগর মঠের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছিলেনবরাহনগর মঠে আমরা অনেক তপস্যা করতাম। ভোর তিনটের সময় ঘুম থেকে উঠে আমরা জপ ও ধ্যানে মগ্ন হয়ে যেতাম। সেই সময় কী তীব্র বৈরাগ্য জন্মেছিল আমাদের মনে! জগৎ আছে কি নেই সে কথা আমরা ভাবতামও না।১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে, নরেন্দ্রনাথ বৈষ্ণব চরণ বসাকের সঙ্গে সঙ্গীতকল্পতরু নামে একটি সঙ্গীত-সংকলন সম্পাদনা করেন। নরেন্দ্রনাথ-ই এই বইটির অধিকাংশ গান সংকলন ও সম্পাদনা করেছিলেন। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য তিনি বইটির কাজ শেষ করে যেতে পারেননি।
সন্ন্যাস গ্রহণ ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে, নরেন্দ্রনাথের গুরুভ্রাতা বাবুরামের মা নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য সন্ন্যাসীদের আঁটপুর গ্রামে আমন্ত্রণ জানান। তারা সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করে হুগলি জেলার আঁটপুরে যান এবং কিছুদিন সেখানে থাকেন। আঁটপুরেই বড়দিনের পূর্বসন্ধ্যায় নরেন্দ্রনাথ ও আটজন শিষ্য আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মৃত্যুর পর তার ভক্ত ও অনুরাগীরা তার শিষ্যদের সাহায্য করা বন্ধ করে দেন। বাড়িভাড়ার টাকা জোগাড় করতে না পারায়, নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য শিষ্যেরা বসবাসের জন্য নতুন বাসস্থানের খোঁজ শুরু করেন।অনেকে বাড়ি ফিরে গিয়ে গৃহস্থ জীবন যাপন করতে থাকেন। অবশিষ্ট শিষ্যদের নিয়ে নরেন্দ্রনাথ উত্তর কলকাতার বরাহনগর অঞ্চলে একটি ভাঙা বাড়িতে নতুন মঠ প্রতিষ্ঠা করার কথা চিন্তা করেন। বরাহনগর মঠের এই বাড়িটির ভাড়া কম ছিল। “মাধুকরী” অর্থাৎ সন্ন্যাসীদের ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে এই বাড়িভাড়ার টাকা জোগাড় করা হত। বরাহনগর মঠ হল রামকৃষ্ণ মঠের প্রথম ভবন। এই মঠে নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য শিষ্যেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধ্যান করতেন এবং কঠোর ধর্মানুশীলন অভ্যাস করতেন।পরবর্তীকালে নরেন্দ্রনাথ বরাহনগর মঠের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছিলেন।
বরাহনগর মঠে আমরা অনেক তপস্যা করতাম। ভোর তিনটের সময় ঘুম থেকে উঠে আমরা জপ ও ধ্যানে মগ্ন হয়ে যেতাম। সেই সময় কী তীব্র বৈরাগ্য জন্মেছিল আমাদের মনে! জগৎ আছে কি নেই সে কথা আমরা ভাবতামও না।
১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে, নরেন্দ্রনাথ বৈষ্ণব চরণ বসাকের সঙ্গে সঙ্গীতকল্পতরু নামে একটি সঙ্গীত-সংকলন সম্পাদনা করেন। নরেন্দ্রনাথ-ই এই বইটির অধিকাংশ গান সংকলন ও সম্পাদনা করেছিলেন। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য তিনি বইটির কাজ শেষ করে যেতে পারেননি।
সন্ন্যাস গ্রহণ ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে, নরেন্দ্রনাথের গুরুভ্রাতা বাবুরামের মা নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য সন্ন্যাসীদের আঁটপুর গ্রামে আমন্ত্রণ জানান। তারা সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করে হুগলি জেলার আঁটপুরে যান এবং কিছুদিন সেখানে থাকেন। আঁটপুরেই বড়দিনের পূর্বসন্ধ্যায় নরেন্দ্রনাথ ও আটজন শিষ্য আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। তারা রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মতো করে জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেন। নরেন্দ্রনাথ “স্বামী বিবিদিষানন্দ” নাম গ্রহণ করেন। শিকাগো যাওয়ার পথে তিনি ” বিবেকানন্দ ” ছদ্মনাম টি গ্রহণ করেন । পরবর্তী কালে ঐ নামটি সর্বাধিক প্রচারিত হয়
Comments
Post a Comment