স্বামীজি ও রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক নিয়ে গীতি আলেখ্য ‘দুই হৃদয়ের নদী’

 

সুপ্রকাশ চক্রবর্তীঃ উনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে নব হিন্দু ধর্মের যে জোয়ার বাংলাদেশের দুই কুল প্লাবিত করেছিল, তার মূলে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দ। 

জীবন দর্শন ও ধর্মচিন্তায় দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুজনেই হিন্দুত্বের জয় গান গেয়েছিলেন।

জোড়াসাঁকোর বাড়িতে একজন উৎসাহী সঙ্গীতবিদ হিসেবে নরেন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে আসেন।

এত কাছাকাছি থেকেও বিবেকানন্দের জীবদ্দশাকাল পর্যন্ত দুই মহাপুরুষ একে অন্যের সম্পর্কে আশ্চর্যভাবে প্রায় নিরব। 

 স্বামীজি যতদিন বেঁচে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ নিন্দা বা প্রশংসা কোথাও কোন লিখিত উক্তি করেননি বিবেকানন্দ সম্পর্কে । স্বামীজিকেও রবীন্দ্রনাথ  সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলতে বা লিখতে দেখা যায়নি।

অথচ জাপানি মনীষী ওকাকুরা যখন স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে দেখা করেন। স্বামীজি তাকে বলেন, এখানে তো সর্বস্ব ত্যাগ। আপনি রবীন্দ্রনাথের সন্ধানে যান। তিনি জীবনের মধ্যে আছেন। আবার ওকাকুরা যখন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করেন, তিনি বলেন, “ভারতবর্ষকে যদি চিনতে চান তবে বিবেকানন্দ কে জানুন।

তাই কবির পদ্মা আর সন্ন্যাসীর গঙ্গা খানিক দূরে একসঙ্গে এগিয়ে দুই খাতে বয়ে গেলেও এই দুজনকে পাশাপাশি রেখেই আমাদের ইতিহাস গৌরবময়। দুই মনীষীর এই সম্পর্কের ইতিহাস নিয়ে কলকাতার গোলপার্কে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারে অনুষ্ঠিত হলো ‘দুই হৃদয়ের নদী’ নামে একটি গীতি আলেখ্য। 

বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রানী ভট্টাচার্যের সংকলনা ও গ্রন্থনায় যেখানে তুলে ধরা হয় রবীন্দ্রনাথ ও স্বামী বিবেকানন্দের লেখা কুড়িটি সঙ্গীত। ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য নিজেও সঙ্গীত পরিবেশন করেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সঙ্গীত গুরু জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দী কমিউনিকেশন সেন্টারের উদ্যোগে  ১৭ তম বাংলা গানের আসরে  বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সম্পাদক জ্যোতির্ময় দত্ত এবং কবি ও পুলিশ আধিকারিক বুদ্ধদেব মুখার্জি (গৌতম ভরদ্বাজ)..এই দুই বিশেষ ব্যক্তিত্বকে তাঁদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবদানের জন্য আনন্দীর তরফ থেকে নীহার-গীতা ও বারীন্দ্র-সুনীতি স্মারক সম্মান ঞ্জাপন করা হয়।

স্মারক এবং  সম্মান দক্ষিণা  তুলে দেন সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারক অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। 

গীতি আলেখ্য ভাষ্যে ছিলেন সুদীপ্তা মুখার্জী। স্বামী বিবেকানন্দের ইংরেজি কবিতা পাঠ করে শোনান বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য।

সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী শমীক পাল,সাগরময় ভট্টাচার্য , শুভাশিস মজুমদার,পায়েল কর,মাধবী দত্ত অনুশীলা বসু,শেলী বিশ্বাস, দেবলীনা ঘোষ,অনস্মিতা ঘোষ,মেধা বসু,তাপস দত্ত,ধৃতি চ্যাটার্জী,স্বর্ণালী পাল,প্রিয়াঙ্গী লাহিড়ী, সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য, মণিশঙ্কর, অভিজিৎ মুখার্জি প্রমুখ।

Comments

Popular posts from this blog

মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সফলতা

কলকাতা হাইকোটের নির্দেশ অনুযায়ী ....