স্বামী যোগানন্দজীর পুণ্য জন্মতিথিতে
স্বামী যোগানন্দজীর পুণ্য জন্মতিথিতে কথামৃতের ব্যক্তি পরিচয় থেকে:-
যোগীন্দ্র [যোগীন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী - স্বামী যোগানন্দ] (১৮৬১ - ১৮৯৯) :-
দক্ষিণেশ্বরের প্রসিদ্ধ সাবর্ণ চৌধুরীর বংশে জন্ম। পিতা নবীনচন্দ্র নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ। দক্ষিণেশ্বরে বাস করিয়াও শ্রীরামকৃষ্ণের সহিত সাক্ষাৎ পরিচয় ছিল না। যোগীন্দ্রনাথও প্রথম দর্শনে তাঁহাকে কালীবাড়ির বাগানের মালী মনে করিয়াছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ কিন্তু প্রথম দিনেই যোগীন্দ্রকে ‘ঈশ্বরকোটী’ বলিয়া চিনিয়াছিলেন। পরবর্তী কালে একদা নিরঞ্জনানন্দ বলিয়াছিলেন - “যোগীন আমাদের মাথার মণি।”
কেশবচন্দ্রের প্রবন্ধাদি পড়িয়া যোগীন শ্রীরামকৃষ্ণের দর্শনে উৎসুক হইয়াছিলেন। প্রথম পরিচয়েই শ্রীরামকৃষ্ণ বলিয়াছিলেন “মহদ্বংশে জন্ম - তোমার লক্ষণ বেশ সব আছে। বেশ আধার - খুব (ভগবদ্ভক্তি) হবে।” তদবধি যোগীন ঘন ঘন ঠাকুরের সঙ্গগুণে তাঁহার মনে বৈরাগ্যের সঞ্চার হইল। পরে চাকুরির চেষ্টায় থাকাকালীন নিতান্ত অনিচ্ছায় বিশেষতঃ মাতার বিশেষ পীড়াপীড়িতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এইজন্য অপরাধীর মতো ঠাকুরের কাছে গেলে তাঁহাকে অভয় দিয়া ঠাকুর বলিয়াছিলেন, এখানকার কৃপা থাকিলে লাখটা বিবাহ করিলেও ক্ষতি নাই। সাংসারিক দৃষ্টিতে অনভিজ্ঞ যোগীন্দ্রনাথকে ঠাকুর নানারকম শিক্ষার দ্বারা উপযুক্ত করিয়া তোলেন। তাই তাঁহাকে একসময়ে বলিয়াছিলেন - ভক্ত হবি, তা বলে বোকা হবি কেন?
কাশীপুরে তিনি প্রাণপণে ঠাকুরের পরিচর্যা করেন। ঠাকুরের নির্দেশে শ্রীশ্রীমা তাঁহাকে মন্ত্রদীক্ষা দেন। এরপরে প্রায় সবসময়ে শ্রীমায়ের সঙ্গে সঙ্গে থাকিয়া তাঁহার সেবায় বাকি জীবন অতিবাহিত করেন। মধ্যে কয়েকবার তীর্থভ্রমণে যান। অতিরিক্ত কৃচ্ছ্রের ফলে ক্রমাগত পেটের অসুখে ভুগিয়া ভুগিয়া মাত্র ৩৮ বৎসর বয়সে দেহত্যাগ করেন। বেলুড় মঠের জমি ক্রয়ের ব্যাপারে তাঁহার অবদান উল্লেখযোগ্য।
ধন্যবাদান্তে প্রতিনিধি বেবি চক্রবর্ত্তী।
Comments
Post a Comment