মানবচেতনাই জীবনের বড় সাধনা:-
সুকলমে :- বেবি চক্রবর্ত্তী- সুখ বা শান্তি জীবন অনুভবমাত্র ..! "তুমি জন্মের সময় কিছু নিয়েও আসনি আর মৃত্যুর পর কিছু নিয়েও যাবে না |"
---"তুমি একমাত্র সেটাই হারাও যেটা তুমি আঁকড়ে ধরে বসে থাকো|" -----
"শান্তি মনের ভিতর থেকে আসে, তাই সেটা অর্থাৎ মন ছাড়া শান্তির অনুসন্ধান করোনা |"
একদিন গৌতমবুদ্ধ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন একজন সন্ন্যাসী তাঁর দেহের অপরূপ জ্যোতি দেখে মুগ্ধ হয়ে যান | ওই সন্ন্যাসী তাঁকে জিজ্ঞেস করেন ! ----"আপনি কি দেবতা ?
বুদ্ধ তাঁকে বলেন, না |
আমিও আপনার মত সাধারণ মানুষ |
শুধু পার্থক্য হল, আমি জেগে আছি
আর আপনি এখনও ঘুমিয়ে আছেন |
ওই সন্ন্যাসী তখন বুদ্ধের কাছ থেকে তাঁর গুরু কে জানতে চান | বুদ্ধ তাঁকে বলেন যে প্রথম প্রথম তিনি অনেককে গুরু হিসাবে অনুসরণ করেছিলেন | কিন্তু পরে তিনি নিজেই নিজের পথ নির্ধারণ করেন , ভুল করতে করতে আলোর সন্ধান পান | এই কথা শুনে ওই সন্ন্যাসী বুদ্ধকে অহংকারী বলে মনে করেন | তিনি বলেন"গুরু ছাড়া" সাধনায় সিদ্ধিলাভ সম্ভব নয় | তুমি তোমার গুরু'র কতৃত্ব নিজেই নিতে চাইছ | এই কথা শুনে বুদ্ধ কোনো কথা না বলে সেখান থেকে চলে যান | তিনি বুঝেছিলেন ওই সন্ন্যাসীর সঙ্গে কথা বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই |
একবার বুদ্ধের কাছে যুবক অঙ্কমাল এসে বললেন "ভগবান আমার ইচ্ছে যে, আমি পৃথিবীর কিছু সেবা করব। আপনি আমাকে আপনার যেখানে ইচ্ছে পাঠিয়ে দিন, সেখানে গিয়ে আমি সেখানকার মানুষদের আলোর পথ দেখাব।" বুদ্ধদেব একথা শুনে হাসলেন আর বললেন, "বৎস, পৃথিবীকে কিছু দেবার আগে তোমার নিজের কাছে তো কিছু থাকা প্রয়োজন। যাও প্রথমে তুমি তোমার নিজের যোগ্যতা বাড়িয়ে তোল,তারপর পৃথিবীর সেরা করবে।"
সন্ধ্যাবেলা বুদ্ধদেব অঙ্কমালকে ডেকে পাঠাল এবং জিজ্ঞাসা করল , "বৎস তুমি কি কাম ! ক্রোধ , লোভ, হিংসার ওপর বিজয় লাভের বিদ্যা, কি তুমি আয়ত্ত করেছ? এবার অঙ্কমাল এর সারাদিন ঘটে যাওয়া সব ঘটনাই মনে পড়তে থাকল। সে লজ্জায় নতমস্তক হয়ে গেল আর সেই দিন থেকে আত্ম বিজয়ের সাধনায় সে মগ্ন হয়ে গেল।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রর্বতক গৌতম বুদ্ধ, যার অন্য নাম সিদ্ধার্থ গৌতম | তিনি আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ বা ৪৮০ অব্দে লুম্বানী, শাক্য গণরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন | পিতা শুদ্ধোধন ও মাতা মায়া দেবীর একমাত্র সন্তান সিদ্ধার্থ গৌতম,তাঁর ধর্ম পত্নী যশোধারা এবং তাঁদের একমাত্র পুত্র সন্তান রাহুল | পরবর্তীতে রাজভোগ ছেড়ে সন্ন্যাস জীবনে ব্রত হন এবং অধ্যাবসায়ে এক পর্যায়ে বোধি লাভ করেন বলে ধারণা করা হয় | গৌতম বুদ্ধ তাঁর অন্তঃদৃষ্ট দিয়ে মানুষের দুঃখ, কষ্ট অনুধাবন করেছিলেন এবং তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করেছিলেন | তাঁর বোধিলাভের পর বৌদ্ধ সংঘ গঠিত হয় , যাতে তাঁর পুত্র রাহুল সহ পালিত মাতা যোগ দান করেন | পাশাপাশি অসংখ্য শিষ্য বৌদ্ধ সংঘের বিস্তার লাভ সহায়তা করেন | গৌতম বৌদ্ধ তাঁর বুদ্ধ সংঘের বিস্তারে এবং মানুষের দুংখ, কষ্ট লাঘবে অনেক অমূল্য বাণী আমাদের জানিয়ে গিয়েছেন যা আজও বাস্তবায়িত |
Comments
Post a Comment