শ্রী শ্রী নাবদ্বীপ মন্ডল পরিক্রমা দিয়ে শুরু হল মায়াপুর ইসকনের আন্তর্জাতিক দোলযাত্রা উৎসব ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ,ইসকনের প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুরে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ৫৩৭তম(২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ) আবির্ভাব উপলক্ষে ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ই মার্চ তথা এক মাস ব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছিল। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো নবদ্বীপ মন্ডল পরিক্রমা। যার শুভ সূচনা হলো ২৩ শে ফেব্রুয়ারি। যা চলবে এক সপ্তাহ ধরে। শুভ আবির্ভাব ইসকনের প্রধান কেন্দ্র শ্রীরাম মায়াপুর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ৫৩৭ তম। শুভ আবির্ভাব তিথি মহোৎসবকে কেন্দ্র করে এক মাস ব্যাপী অনুষ্ঠান চলছে।নবদ্বীপ মন্ডল পরিক্রমা।
এই সাত দিনে মোট ৭২ কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করবে এই পরিক্রমা মন্ডলী। বিশ্ব শান্তি যজ্ঞ, নৌকা বিহার, বিভিন্ন ভাষায় ভগবত পাঠ, সেমিনার, ভজন- কীর্তন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলবে এই এক মাসের উৎসবে। ইসকন মায়াপুরের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ১০০ টি দেশে প্রায় ৫০০০ বিদেশী ভক্ত সহ প্রায় ১৫০০ হাজার ভক্তবৃন্দ নিয়ে মোট সাতটি দলে বিভক্ত হয়ে শুরু হল এই মন্ডল পরিক্রমা।
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তন্ডলী প্রচন্ড হরিনাম বিতরণ করেছিলেন তৃণ ধর্ম তিনি জীবজগতের প্রেম ধর্ম বিতরণ করেছিলেন তিনি বলেছিলেন পৃথিবীতে যত নগরাধী গ্রাম সর্বোচ্চ প্রচারিত হবে মোর নাম যতটুকু আমরা দেখতে পাচ্ছি। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ কাছে সমস্ত বিশ্ববাসী কাছে শান্তির বার্তা অহিংসার বার্তা এবং বিশ্ব ভারতী বোধ জাগরনের জন্য এবং মানুষ তার মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটুক হুস ফিরে আসুক ।হিংসা নয়, দন্ড নয্, যুদ্ধ নয্, শান্তির বার্তা এটি পৌঁছে দেওয়া। যাত্রী নিরাপত্তায় প্রায় এক হাজার পুলিশ সহ উপস্থিত ছিল প্রায় দেড় হাজার ইসকনের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব দিনটি ধর্মীয় মর্যাদায় পালন করার উদ্দেশ্যেই এই দোল পূর্ণিমার শুভ সূচনা করা হয়। এই সময় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দেশ-বিদেশের কয়েক হাজার ভক্তের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছে ইসকন মায়াপুর।ইসকনের কোন রং এর খেলা হয় না। আবির খেলা হয় না এমনকি যারা রং মেখে বিভিন্ন কাজে আসতে চান তাদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়। সন্ধ্যায় আবির্ভাব মুহূর্ত আবির্ভাব মুহূর্ত টিকে ধরে রাখার জন্য পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করা হয়। এখানে সবাই পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারে। দোলের সময় ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই দোল পূর্ণিমার দিনে সেটি এবছর সাথী মাস চারটি খোলা মঞ্চে অনুষ্ঠান হবে লক্ষ লক্ষ ভক্ত বৃন্দ সমাবেশ হবেন। ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অবাধ প্রবেশ রয়েছে এই উৎসবে এবং বিশ্ব শান্তি এবং বিশ্বাস কল্যাণের জন্য মহাপ্রভু শ্রী চরণে প্রার্থনা করা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনার কারণে দুই বছর সেইভাবে এই অনুষ্ঠান না হলেও এবছর আবারো কয়েক হাজার ভক্ত সমাগমে এক অন্য মাত্রায় শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাব তিথি অর্থাৎ দোল উৎসবে শুভ সূচনা করলো ইসকন মায়াপুর।
শ্রীনবদ্বীপ ধাম পরিক্রমা পল্লী
শ্রীগোদ্রুমদ্বীপ (কীৰ্ত্তনাখ্য) আমঘাটা, গোরাদহ, গাদিগাছা, ভক্তিবিনোদ সমাধি ও ভজন কুঠির, সুরভীকুঞ্জ, হংসবাহন শিব ও নৈমিষারণ্য দর্শনান্তে গোমতী গঙ্গা
আশ্রমে রাত্রি যাপন । দ্বিতীয় দিবস : ২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার
শ্রীমধ্যদ্বীপ (স্মরণাখ্য) ব্রাহ্মণ পুষ্কর, কুরুক্ষেত্র, পঞ্চবেণী, গৌরাঙ্গ সেতু পার হয়ে শ্রীকোল দ্বীপ (পাদসেবনাখা), পৌঢ়মায়া, শ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া সেবিত শ্রীমন্মহাপ্রভু, শ্রীল জগন্নাথ দাস বাবাজী মহারাজের সমাধি স্থান দর্শনাস্তে কোলদ্বীপ গৌড়ীয় মঠ, গঙ্গা স্নান সেরে মহিসুরায় অবস্থান।
তৃতীয় দিবস : ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার
সমুদ্রগড়, চাপাহাটী, রাতুপুর (শ্রীঋতুদ্বীপ) (অর্চনাখ্য) বিদ্যানগর (সার্বভৌম ভট্টাচার্য্যের শ্রীপাট), মাগনপুরে অবস্থান।
চতুর্থ দিবস : ২৬শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩, রবিবার
শ্ৰীজহুদ্বীপ, মামগাছি (বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের ভজনস্থলী), মোদদ্রুম দ্বীপ, পঞ্চপাণ্ডব স্থান (মহৎপুর), বৈকুণ্ঠপুর, প্রতাপনগর ইসকন মন্দিরে রাত্রি যাপন।
পঞ্চম দিবস : ২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার
গঙ্গাপার হয়ে শঙ্করপুর (শ্রীরুদ্রদ্বীপ) (সখ্যাখ্য) রুদ্রপাড়া, বেলপুকুর (নীলাম্বর
চক্রবর্ত্তী ঠাকুরের শ্রীপাট), স্থানীয় ময়দানে অবস্থান।
ষষ্ঠ দিবস : ২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
পঞ্চবক্র শিবস্থান, সীমন্তিনী মন্দির, শ্রীবল্লালঢিপি, শ্রীগৌর জন্মভিটা (যোগপীঠ), শ্রীবাস অঙ্গন, খোলভাঙ্গার ডাঙ্গা, শ্রীঅদ্বৈত ভবন, শ্রীগদাধর অঙ্গন, শ্রীচৈতন্য মঠ (শ্রীচন্দ্রশেখর আচার্য্য ভবন), শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের সমাধি মন্দির, শ্রীমুরারী গুপ্তের শ্রীপাট, চাঁদ কাজীর সমাধি প্রভৃতি দর্শনাস্তে রাজাপুর শ্রীজগন্নাথ মন্দির শ্রীসীমস্তদ্বীপে (শ্রবণাখ্য) অবস্থান এবং অপরাহ্নে শ্রীধর অঙ্গন দর্শন।
সপ্তম দিবস : ১লা মার্চ ২০২৩, বুধবার
সুবর্ণ বিহার, পঞ্চানন তলা, নৃসিংহপল্লী হয়ে হরিহর ক্ষেত্রে রাত্রি যাপন।
অষ্টম দিবস : ২রা মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার
তারনপুর খেয়া ঘাট দিয়ে সরস্বতী নদী পার হয়ে শ্রীমায়াপুরে নন্দন আচার্য্যের ভবন দর্শন এবং ইস্কন শ্রীধাম মায়াপুরে মহামিলন।
Comments
Post a Comment