প্রতিবাদ সাভা

 


৬ই মে কলকাতার প্রেস ক্লাবে- কলকাতার দূর্গাপূজা আয়োজকদের সংগঠন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের উদ্যোগকে অস্বীকার করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আয়োজিত প্রতিবাদ সভা। প্রত্যেকেই অবগত আছেন ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলার দূর্গাপূজা UNESCO ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি লাভ করেছিল। এই স্বীকৃতি আদায় আকস্মিকভাবে প্রাপ্ত কোনো ঘটনা নয়, এক দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ এই শিরোপা অর্জন করা গিয়েছিল। আপনাদের অনেকেরই স্মরণে আছে গত বছরের মাঝামাঝি কলকাতার শারদোৎসবের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আবেদন করেছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিভাগে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা কলকাতার দূর্গাপূজার মূল্যায়ন করেন। এই সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র যোগাড় করার প্রচেষ্টাও চালিয়েছেন ফোরামের অন্তর্গত বিভিন্ন ক্লাবের প্রতিনিধিরা।

অবশেষে সব কিছু বিচার বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রীর সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত ডিসেম্বর মাসে UNESCO আমাদের সেই বহুকাঙ্খিত আন্তর্জাতিক শিরোপা প্রদান করেন। অথচ খুব দুঃখের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি কিছু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করার একটা চক্রান্ত চলছে। বিগত ১০ বছর ধরেই আমরা যারা কলকাতার দূর্গাপূজার সঙ্গে জড়িত তারা জানি প্রতি বছরেই আমাদের রাজ্য সরকার সুষ্ঠভাবে দূর্গাপূজা আয়োজনের জন্য কত নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তাধারার প্রয়োগ করেন। আগে যেমন চতুর্দিক ঘুরে আমাদের পুজোর অনুমতি আদায় করতে হতো এখন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এক অন্য রকম পদ্ধতিতে খুব সহজেই পুজোর অনুমতি পাওয়া যায়। পুজো সংক্রান্ত বিভিন্ন আবেদনের জন্য কোন অর্থ আমাদের দিতে হয় না।পূজা বিদ্যুতের মাসুলও ছাড় দেবার ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রী করে দিয়েছেন। সারা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩৬০০০ ক্লাব গুলোর সময় মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ৫০০০০ টাকা করে অনুদান প্রদান করেন যার ফলে বহু ক্লার সহজেই পুজোর আয়োজন করতে পারে, পুজোর খুঁটিনাটি সমস্ত বিষয়েই রাজ্যসরকার পুজো উদ্যোক্তাদের যাতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা না হয় তার জন্য বোধন থেকে বিসর্জন অবধি প্রশাসন সদা জাগ্রত থাকেন। বিসর্জনের সময় রেড রোডে আয়োজিত কার্নিভ্যাল দিনে দিনে এক আন্তর্জাতিক উৎসব হয়ে উঠতে চলেছে। অথচ যারা এক সময় কটাক্ষ করেছিলেন বাংলায় সেই রকম ভাবে দুর্গাপুজাই হয় না তারা এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করতে চাইছেন মেকী পুজোদরদী হয়ে। কলকাতা, হাওড়া, বর্ধমান সহ বিভিন্ন পুজো সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমাদের ফোরাম ফর দুর্গোৎসব যেভাবে সারাবছর পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে থাকে তাদেরকেও ব্রাত্য করে রাখা হচ্ছে। কলকাতার দুর্গাপূজো নিছকই একটা পুজো নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে বিশাল সংখ্যক সাধারণ মানুষ, তাদের আবেগ। শুধু তাই নয় দুর্গা পুজোর উপরই নির্ভরশীল নানা সম্প্রদায়ের মানুষ, বহু মানুষের একমাত্র উপার্জন দুর্গাপুজো। ডেকরেটার, ইলেকট্রিশিয়ান, থিম শিল্পী, মৃৎশিল্পী, পুরোহিত, ঢাকিসহ, বিজ্ঞাপনদাতা, এমনকি ঘরের মহিলাদের ছাড়া দুর্গাপুজো ভাবা অসম্ভব।আজ তারাও এই অনুষ্ঠানে ব্রাত্য।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে UNESCO-র এই স্বীকৃতি সূচক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সেখানে যাঁরা এত বছর সেই স্বীকৃতি লাভের নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলেন সেই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্যের পূজাপ্রেমী বহু মন্ত্রী সহ কলকাতার ফোরাম ফর দুর্গোৎসবকেও আমরা না জানানোর এই ঘৃণ্য চক্রান্তকে আমরা তীব্র ভাষায় নিন্দা করছি। একটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর এক প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করার অপচেষ্টা আমরা পশ্চিমবাংলার সমস্ত মানুষজনের পক্ষে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের কর্মসমিতি ধিক্কার জানাচ্ছে। আগামী ১লা সেপ্টেম্বর সারা পশ্চিমবঙ্গের

পুজোপ্রেমী মানুষজন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পথে নেমে UNESCO কে ধন্যবাদ জ্ঞাপক বিশ্বস্বীকৃতি অর্জনের এই পদযাত্রার মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে রাজা সরকারের উদ্যোগের প্রচেষ্টার কথা পৌঁছে দেব।

Comments

Popular posts from this blog

মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সফলতা

'দরবারী পদাবলী'-তে গুরু-শিষ্য পরম্পরার অনবদ্য নজির কলকাতায়